কুরবানীর পশু: যোগ্যতা, ত্রুটি এবং জবাই সংক্রান্ত মাসআলা
উত্তম কুরবানীর পশু
মাসআলা ২০: হৃষ্টপুষ্ট, মাংসল পশু কুরবানীর জন্য উত্তম।
দলিল: মুসনাদে আহমদ ৬/১৩৬, আলমগীরী ৫/৩০০, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩
❌ অযোগ্য কুরবানীর পশু ও তাদের ত্রুটি
মাসআলা ২১-২৬:
নিচের পশুগুলো কুরবানীর অযোগ্য:
হাঁটতে অক্ষম রুগ্ন ও দুর্বল পশু (তিরমিযী ১/২৭৫)
দাঁতবিহীন বা খাদ্য চিবাতে অক্ষম পশু (বাদায়েউস ৪/২১৫)
গোড়া থেকে শিং ভাঙ্গা পশু (তিরমিযী ১/২৭৬, আবু দাউদ ৩৮৮)
অর্ধেক বা তার বেশি কান/লেজ কাটা পশু (তিরমিযী ১/২৭৫, আহমদ ১/৬১০)
দুটি চোখ অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট পশু (তিরমিযী ১/২৭৫)
তিন পায়ে চলা বা চরম খোঁড়া পশু (তিরমিযী ১/২৭৫)
হাদীস: রাসূল ﷺ বলেন:
“চার প্রকার পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে না: চোখে স্পষ্ট দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা, স্পষ্ট রোগ, স্পষ্ট খোঁড়া, অতিশীর্ণ পশু।”
মুয়াত্তা মালেক ২/৪৮২; তিরমিযী ১৪৯৭
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা
মাসআলা ২৭-৩১:
হারানো পশু পেলে এবং নতুন কেনা হয় – ধনী হলে একটি কুরবানী করলেই যথেষ্ট (বায়হাকী ৫/২৪৪)
গর্ভবতী পশু – কুরবানী জায়েয তবে প্রসব কাছাকাছি হলে মাকরূহ (কাযীখান ৩/৩৫০)
পশু কেনার পর দোষ ধরা পড়লে – নতুন পশু কুরবানী দিতে হবে (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯)
বিক্রেতার কথা বিশ্বাসযোগ্য হলে পশু কুরবানী বৈধ (আহকামে ঈদুল আযহা, পৃঃ ৫)
বন্ধ্যা পশু – কুরবানী বৈধ (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫)
জবাই সংক্রান্ত মাসআলা
মাসআলা ৩২-৩৫:
নিজে জবাই করা উত্তম, না পারলে উপস্থিত থাকা সুন্নত (আহমদ ২২৬৫৭)
একাধিক ব্যক্তি জবাই করলে সবাইকে ‘বিসমিল্লাহি’ পড়তে হবে (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৪)
জবাইয়ের আগে উপকার নেয়া নিষিদ্ধ (মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬)
দুধ দোহন নিষিদ্ধ, দোহন করলে সদকা করতে হবে (ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭)
শরীক, মৃত ও বাচ্চা সংক্রান্ত বিধান
মাসআলা ৩৬-৩৮:
শরীকের মৃত্যু হলে ওয়ারিসের অনুমতি প্রয়োজন (বাদায়েউস ৪/২০৯)
কুরবানীর আগে বাচ্চা হলে তা সদকা করা উত্তম (আলমগীরী ৫/৩০১)
মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী – ওসিয়ত থাকলে গোশত নিজে খাওয়া যাবে না (মুসনাদে আহমদ ১/১০৭)
গোশত সংরক্ষণ ও বণ্টন
মাসআলা ৩৯-৪০:
গোশত ফ্রিজে রাখা বৈধ (মুসলিম ২/১৫৯)
শরীকে কুরবানীতে ওজন করে বণ্টন আবশ্যক (আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭)
এই পোস্টটি কুরবানীর পশু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা ও দলিলভিত্তিক ফিকহি বিধানসমূহ তুলে ধরেছে। আশা করি, কুরবানীর সময় আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।