ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব: কুরআন ও হাদীসের আলোকে সামাজিক ন্যায় ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য:
ইসলামে যাকাত হল সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক ভারসাম্য স্থাপনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এটি ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি। ধনীদের ওপর ফরজ করা হয়েছে যাকাত আদায় করা, যাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন পূরণ হয় এবং সমাজে অর্থনৈতিক অসমতা কমে আসে। কুরআন ও হাদীসে যাকাতের গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।
কুরআনে ইসলামে যাকাতের গুরুত্ব
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা বলেন:
“তোমরা সালাত কায়েম কর এবং যাকাত প্রদান কর এবং রুকূকারীদের সাথে রুকূ কর।”
— (সূরা আল-বাকারা, ২:৪৩)
আরও বলেন:
“তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট হক আছে — চাওয়া প্রার্থী ও বঞ্চিতদের জন্য।”
— (সূরা যারিয়াত, ৫১:১৯)
এই আয়াতগুলো থেকে স্পষ্ট হয়, যাকাত শুধু ব্যক্তিগত ইবাদত নয়, বরং এটি সামাজিক দায়িত্বও।
হাদীসে যাকাতের গুরুত্ব
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“আল্লাহর কাছে প্রিয় আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সালাত নির্ধারিত সময়ে আদায় করা, এরপর পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার এবং তারপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।”
— (সহীহ বুখারী, হাদীস: ৫২৭)
আর যাকাত না দেওয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন:
“যে ব্যক্তি তার ধনসম্পদ থেকে যাকাত আদায় করবে না, কিয়ামতের দিন তার জন্য আগুনের তৈরী দাগ দিয়ে চিহ্নিত করা হবে।”
— (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৯৮৭)
এসব হাদীস যাকাতের অপরিহার্যতা এবং অবহেলার পরিণাম সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করে।
যাকাতের ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রভাব
আত্মার পরিশুদ্ধি এবং লোভ থেকে মুক্তি।
গরিব-দুঃখীদের সহায়তা প্রদান।
ধন-সম্পদের বরকত বৃদ্ধি।
সমাজে শ্রেণি বৈষম্য কমানো এবং ঐক্য বৃদ্ধি।
উপসংহার
যাকাত মুসলিম সমাজের অর্থনৈতিক সুস্থতা এবং আত্মিক পরিশুদ্ধির প্রধান মাধ্যম। কুরআন ও হাদীসের নির্দেশ অনুযায়ী সময়মতো যাকাত আদায় করা প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব। এতে ব্যক্তিগত কল্যাণের পাশাপাশি সমাজও উপকৃত হয় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
যাকাত সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য ক্লিক করুন
আমাদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য ক্লিক করুন